দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ :: একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২দিনব্যাপী লোক উৎসব শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (০৭-০২-২৫) রাত ৮ঘটিকার সময় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বাউলের নিজ গ্রাম উজান ধলের মাঠে লোক উৎসবের উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। শাহ আব্দুল করিম পরিষদ ও ধল গ্রামবাসীর আয়োজনে এবং বেসরকারী ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান বিকাশ’র সহযোগিতায় লোক উৎসবটি শুরু হয়েছে।

উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে করিমের ভক্ত শিষ্যদের আগমন হয়েছে। তাদের পদচারণায় মুখরিত দিরাই উপজেলা সদর থেকে উজানধল গ্রাম পর্যন্ত। শাহ আব্দুল করিম পরিষদের সভাপতি করিমপুত্র শাহ নুর জালালের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক দেওয়ান গিয়াসের পরিচালনায় করিম দর্শন শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিকাশ কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব সরকার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক, তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ।

আলোচনাসভা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গান গানে শাহ আব্দুল করিম। প্রথমেই সমবেত কন্ঠে শাহ আব্দুল করিম রচিত “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম” গানটি পরিবেশন করেন বাউল আব্দুর রহমান, রনেশ ঠাকুট, সিরাজ উদ্দিন, শাহ নুরজালাল, সুর্যলাল দাস, সৌরব সোহেল, বাউলিয়ানা ফয়সলসহ অর্ধশত বাউল শিল্পীবৃন্দ। আব্দুল করিম পরিষদের সভাপতি ও বাউল সম্পুরাট শাহ আব্দুল করিমপুত্র শাহ নুর জালাল জানান, ভোর রাত পর্যন্ত চলবে গানের আসর। এতে গান পরিবেশন করবেন ফকির শাহাব উদ্দীন, আশিক, চেন্যাল আইর বাংলা গানের তারকা দোয়েল, মুক্তা সরকার, রুমকী সরকার, লাভলী দেব, শারমীন আক্তার, সূর্য লাল দাস, সৌরভ সোহেল, ফকির মাহমুদা, সিরাজ উদ্দীন, রণেশ ঠাকুর, প্রাণকৃষ্ণসহ অনেক গুণী শিল্পিরা।

উল্লেখ্য, ১৯১৬ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারী উপজেলার ধল আশ্রম গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে লোক সংগীতের প্রাণ পুরুষ শাহ আব্দুল করিম জন্ম গ্রহণ করেন। দারিদ্রতার কারণে তাঁর স্কুলে যাওয়া হয়নি। তারপরেও এ স্বশিক্ষিত বাউল করিম শত শত কালজয়ী গান রচনা করে দেশে বিদেশে মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন একাধারে সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার এবং গীতিকার। ২০০১ সালে তিনি লোক সঙ্গীতের ওপর একুশে পদকে ভূষিত হন।

২০০৬ সাল থেকে বাউল করিমের জীবনদ্বশায় এ লোক উৎসবের সূচনা হয়। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বাউল করিম সিলেটের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।